বলা হয় বই আমাদের সব থেকে ভালো বন্ধু, যে আমাদের সব কিছু দেয় কিন্তু বিনিময়ে তাকে কিছু দিতে হয় না। Rich Dad Poor Dad ব্যাক্তিগত অর্থনৈতিক সম্পর্কে সব থেকে ভালো বই গুলোর মধ্যে একটা, যা আপনার বন্ধু হতে পারে যদি আপনি অর্থনৈতিক দিক থেকে সাফল্য পেতে চান।Summary of Rich Dad Poor Dad in Bengali আপনাকে Rich Dad Poor Dad বইটি সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারনা তইরী করবে। কেন আপনি এই বই টা পড়বেন এবং এটা আপনাকে কিভাবে অর্থনৈতিক দিক থেকে সাহায্য ক্ররবে,এই বই কাদের পড়া উচিত এবং সবথেকে প্রয়োজনীয় এই বইয়ের মূল তথ্য যা আমরা আমাদের মতো করে এখানে বাংলায় বিব্রিতি করব।
আমরা কখনই এই মতে বিশ্বাস করি না যে, আপনি পুরো বইটা পড়বেন না বা আপনাকে পুরো বই পড়তে হবেনা। কিন্তু এটাও ঠিক আপনি পুরো বই না পড়লেও মূল তথ্য গুলো সম্পর্কে অবগত হবেন এবং তা আপনার জীবনে কাজে আসবে।
Table of Contents
সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
Rich Dad Poor Dad বইটা লেখেন জাপানি লেখক রবার্ট টি. কিওশাকি। তিনি একজন সফল ব্যাবসায়ি, বিনিয়োগকারী। এখানে সবমিলিয়ে তেরোটা অধ্যায় আছে। প্রত্যেকটি অধ্যায় থেকে আপনি ব্যাক্তিগত অর্থনৈতিক ব্যাপারে এমন কিছু শিখবেন।যেটা আমাদের চিরাচরিত শিক্ষা ব্যাবস্থায় পাঠ্য পুস্তক কোন দিন শেখায় নি।
লেখক এখানে তাঁর ছোট বেলা থেকে আরম্ভ করে সফল ব্যাবসায়ী হওয়া পর্যন্ত অভিজ্ঞতা ব্যাক্ত করেছেন। তিনি ছোট বেলায় দুজন পিতার সান্নিধ্যে বড়ো হয়েছেন বা বলা যায় দুজন পিতার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। একজন যিনি তাঁর নিজের বাবা যাকে তিনি এখানে Poor Dad বলে অভিহিত করেছেন কারন তিনি উচ্চশিক্ষিত পেশাগত দিক থেকে সফল হলেও আর্থিক দিক থেকে গড়পড়তা একজন মানুষ, একজন ভালো শিক্ষক, যিনি বিশ্বাস করেন ভালো স্কুলে পড়া, ভালো রেজাল্ট করে একটা ভালো চাকরি করে নিজের জীবনের নিরাপত্তা কে প্রতিস্থাপন করা।
এবং আরেকজন পিতা ছিলেন তাঁর বন্ধু মাইকের বাবা তিনি উচ্চ শিক্ষিত না হলেও, আর্থিক দিক থেক সফল। আর্থিক ব্যাবস্থা কে তিনি অন্য ভাবে দেখতেন। এনাকে তিনি Rich Dad বলেছেন।
তিনি এখানে তাঁর দুজন বাবার দৃষ্টি ভঙ্গিকে ব্যাক্ত করছেন একজন যিনি মারা যাওয়ার পর পরিবারের জন্য অর্থ সম্পত্তি ছেড়ে গেছেন অন্যজন শুধুই পরিশোধ করার জন্য হিসাবের খাতা। দুজনেই তাঁকে উন্নতি করার পরামর্শ দিতেন কিন্তু তাঁদের চিন্তা ভাবনার পার্থক্য ছিল। দুজনেই তাঁকে শিক্ষিত হওয়ার পরামর্শ দিতেন কিন্তু একই বিষয়ে নয়। লেখক দুজন বাবার দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলনা করতেন। এবং নিজের যেটা ঠিক মনে হত সেটা কে গ্রহণ করতেন।
লেখকে তাঁর বইয়ে দুই পিতা যখন নিজের পেশায় তাঁরা সংগ্রাম করছেন তখন দুজনের তখনকার দৃষ্টিভঙ্গিকে ব্যাক্ত করেছেন যেগুলো তাঁর নিজের বাবা কে গরীব এবং বন্ধুর বাবা কে ধনী তৈরী করেছিল।
ক্রমিক সংখ্যা | পুওর ড্যাড দৃষ্টিভঙ্গি | রিচ ড্যাড দৃষ্টিভঙ্গি |
১. | অর্থের প্রতি ভালোবাসা সমস্ত সমস্যার মূল | অর্থাভাব সমস্ত সমস্যার মূল। |
২. | এটা আমি সমর্থ নই। | এটাতে আমি কি ভাবে সমর্থ হতে পারি। |
৩. | ধনী দের বেশি ট্যাক্স দেওয়া উচিত যাতে যারা কম ভাগ্যবান তাঁদের উপকার হয়। | অন্যজন ভাবতেন ট্যাক্স হলো উতপাদনকারী দের জন্য শাস্তি উপহার। |
৪. | ভালো করে পড়ো যাতে তুমি একটা ভালো সংস্থায় চাকরি পেতে পারো। | ভালো করে পড়ো যাতে তুমি সংস্থা কিনে নিতে পারো। |
৫. | আমি ধনী নই কারন আমার সন্তান আছে। | আমার ধনী হওয়া উচিত কারন আমার সন্তান আছে। |
৬. | অর্থের কথা এলেই তিনি নিষেধ করতেন। | খাবার টেবিলে অর্থ এবং ব্যাবসা নিয়ে উৎসাহিত করতেন। |
৭. | অর্থের বিষয়ে তিনি নিরাপদে থাকতে বলতেন কোন রকম ঝুঁকি নিতে বারন করতেন। | ঝুঁকি নিয়ন্ত্রন করতে শিখতে বলতেন। |
৮. | আমাদের বাড়ি আমাদের বড়ো বিনিয়োগ এবং এটা আমদের বড়ো সম্পদ। | আমাদের বাড়ি আমাদের দায়িত্ব এবং যদি এটা আপনার বড়ো বিনিয়োগ হয় তাহলে আপনি সমস্যায় আছেন। |
৯. | তাঁর চিকিৎসা, অবসর কালীন সুবিধা সমস্ত কিছুর জন্য সরকারি পরিষেবার উপর ভরসা করতেন। | অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার উপর ভরসা করতেন। |
১০. | তিনি কিছু ডলার বাঁচানোর জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতেন। | তিনি বিনিয়োগ করার জায়গা তৈরী করতেন |
১১. | ভালো জীবনপঞ্জি লেখা শেখাতেন যাতে ভালো কাজ পাওয়া যায়। | শেখাতেন কিভাবে ব্যাবসায়িক এবং অর্থনৈতিক প্লান লিখতে হয় যাতে অন্যের জন্য কাজ তৈরী করা যায়। |
১২. | পুওর ড্যাড নিজেকে সব সময় গরীব বলতেন। এবং তিনি বলতেন তিনি কখন ধনী হতে পারবেন না। | রীচ ড্যাড নিজেকে সবসময় ধনী বলতেন। যখন তিনি অর্থনৈতিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হন তখনও তিনি নিজেকে ধনী বলতেন। |
যাইহোক তাঁর কাছে দুজনের মনোভাব কে বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ ছিল এবং তিনি পরবর্তী কালে তাঁর ধনী বাবার অর্থাৎ বন্ধুর বাবার সিদ্ধান্ত কে প্রাধান্য দেন।
Lesson 1: Rich Don’t Work for Money. (ধনীরা টাকার জন্য কাজ করেন না)।
Rich Dad Poor Dad – এ লেখক তাঁর রিচ ড্যাড-এর কাছ থেকে শিখেছেন ধনীরা টাকার জন্য কাজ করেনা। তাঁরা কোন কাজ কে করেন শেখার জন্য, নতুন শিক্ষা দিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করে তোলেন। এবং তা তাঁদের কে আরও ধনী করে তোলে। যেখানে একজন সাধারন মানুষ পছন্দ করেন কাজের বিনিময়ে মাসের শেষে মাইনে নিতে। সেখানে একজন ধনী ব্যাক্তি পছন্দ করেন সেই কাজ থেকে শিখে কিভাবে নতুন সু্যোগ তৈরী করা যায়।
“Rich Don’t work for Money” অনেকেই ভাবেন ধনীরা মনে হয় কাজা করেন না কিন্তু আসল বিষয় টা ঠিক তার উল্টো ধনীরা অনেক বেশি কাজ করেন কিন্তু তাঁদের মূল উদ্দ্যেশ্য মাসের শেসের বেতন কোন ভাবেই নয়।
Lesson 2: Why Teach Financial Literacy? ( কেন অর্থনৈতিক শিক্ষা দরকার?)
Rich Dad Poor Dad – দ্বিতীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলও কেনো অর্থনৈতিক শিক্ষা দরকার? তিনি প্রথমেই বলেছেন তাঁর দুজন পিতা তাঁরা নিজের নিজের পেশায় খুবি সফল। দুজনেই শিক্ষা কে সমান গুরুত্ব দেন। কিন্তু তবুও একজন তাঁর পরিবারের জন্য প্রচুর টাকা এবং সম্পত্তি রাখতে সমর্থ হন এবং অন্য জন শুধুই পরিশোধ করার জন্য বিল।
বেশির ভাগ মানুষ এটা বুঝতে পারেন না যে, আপনি সারাজীবনে কতো টাকা উপার্জন করছেন তার থেকে বেশি জরুরী আপনি কতো টাকা রাখতে পারছেন। কারন এটা আমরা অনেকেই জানি অনেকেই লটারিতে অনেক টাকা জেতেন কিন্তু অর্থনৈতিক শিক্ষা না থাকার জন্য সেই টাক তিনি বেশি দিন রাখতে পারেন না। তাই তিনি যে জীবন কাটাচ্ছিলেন সেই ভাবেই তাঁকে জীবন কাটাতে হয়।
অর্থনৈতিক শিক্ষা Asset এবং Liability কে খুব ভালো ভাবে বুঝতে সাহায্য করে। লেখক বলছেন একজন ধনী ব্যক্তি সারা জীবন ধরে Asset তৈরী করে এবং সেগুলো কে বাড়াতে থাকেন।সেখানে একজন গরীব মানুষ বা মধ্যবিত্ত মানুষ Liability বাড়াতে থাকেন। সাধারন ভাবে বুঝতে গেলে বলতে হয় Asset হলও এমন জিনিস যা থেকে আপনার উপার্জন হয় এবং Liability হলও এমন কিছু যার জন্য আপনাকে খরচ করতে হয়।
Lesson 3: Mind Your Own Business (নিজের ব্যাবসায় মন দিন)।
লেখক এখানে নিজের জন্য ব্যাবসার পরামর্শ দিয়েছেন। কারন ধনী ব্যাক্তিরা সবসময় তাঁদের সম্পদ তইরী করতে থাকেন সেখানে অন্যরা নিজের দায়িত্ব বাড়াতে ব্যাস্ত থাকেন। লেখক বলেছেন আপনি যদি সারাদিন নিজের চাহিদা মেটাতে কোথাও কাজ করে থাকেন তাহলে আপনার উচিত নিজের জন্য একটা ব্যাবসা তৈরী করা উচিত।
ব্যবসা অর্থাৎ যেখানে আপনাকে উপস্থিত না থাকলেও অন্যেরা কাজ করলে চলবে। আর যদি আপনার উপস্থিতি সেখানে দরকার হয় তাহলে সেটা ব্যাবসা নয় সেটা আপনার চাকরি। এক্ষেত্রে স্টক, বন্ড, রিয়েল এস্টেট, যা কিছু হতে পারে, যা আপনাকে উপার্জন এনে দেবে বা সেই জাতীয় যা কিছুতে আপনি সময় দিতে পারেন বা এমন কোন ব্যবস্থা তৈরী করতে পারেন।
Lesson 4: The History of Taxes and the Power of Corporation.( ট্যাক্সের ইতিহাস এবং সংস্থার ক্ষমতা)।
Rich Dad Poor Dad – এ লেখক চার নম্বর অধ্যায়ে কর দেওয়াকে কি ভাবে বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যাবহার করে সুবিধা ভোগ করা যায় সেই পন্থাই দেখিয়েছেন।
কর প্রদানের ইতিহাস অনু্যায়ী সবথেকে বেশি কর প্রদান করেন চাকরিজীবী মানুষেরা। আপনি যদি টাকার জন্য কাজ করেন তাহলে নিজেকে কাজ করানোর ক্ষমতা আপনি অন্য কাউকে দেন। আর যদি টাকা আপনার জন্য কাজ করে তাহলে আপনি ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেন। যারা চাকরি করেন তাঁরা প্রথমে কর প্রদান করেন তাঁরপর যা বাঁচে তা থেকে খরচ করেন কিন্তু এই করের থেকে বাচার অনেক রাস্তা আছে যা ধনী ব্যাক্তিরা খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যাবহার করেন। যেমন তাঁরা প্রথম খরচ করেন পরে কর প্রদান করেন। তাঁদের কর্মচারীর মাইনে, রেস্তরাঁর বিল, স্বাস্থ্য বিমা, এসব কিছুতে করের ছাড় থাকে যেগুলো তাঁরা খুব বুদ্ধির সাথে ব্যাবহার করেন। এবং করের বোঝা কমিয়ে ফেলেন।
Lesson 5: The Rich Invent Money (ধনী ব্যাক্তি রা টাকা তৈরি করেন)।
লেখক Rich Dad Poor Dad বই তে বলেন তাঁর ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা এটাই যে অর্থনৈতিক প্রতিভা, সাহস এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান থেকেই আসে। যদি ভয় খুব বেশি থাকে তাহলে তা আপনার প্রতিভা কে দমিয়ে দিতে পারে। ধনী ব্যাক্তি রা টাকা তৈরী করেন বলতে লেখক বলেছেন তাঁরা বিভিন্ন ভাবে টাকা আসার রাস্তা তৈরী করতে থাকেন। তার জন্য সঠিক শিক্ষা এবং সাহস এর প্রয়োজন যেটা তাঁদের আছে অথবা কি ভাবে এই দুটি কে করায়ত্ত করা যায় সেটা তাঁরা জেনে নিয়েছেন।
এক্ষেত্রে তিনি বিনিয়োগের উপর জোর দিয়েছেন, লেখক বলছেন বিনিয়োগ দু ধরনের হয়।
প্রথমঃ বেশির ভাগ মানুষ স্টক শেয়ার কেনেন এবং প্রতিষ্টানের ফান্ড ম্যানেজারের উপর ভরসা করেন।
দ্বিতীয়ঃ পেশাদার বিনিয়োগ কারিরা নিজেরা পড়াশোনা করেন, এবং নিজেদের বিনিয়োগ নিজেরা নিয়ন্ত্রন করেন। নতুন নতুন রাস্তা খুজতে থাকেন যেটা তাঁদের কে আরও বেশি লাভবান করায়। পেশাদার বিনিয়োগ কারিদের মধ্যে ৩ টি জিনিস খুবি সাধারন ভাবে চোখে পড়ে।
১. সুযোগ খুঁজে বার করা যেটা অন্যদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
২. বিনিয়োগের জন্য টাকা কে তৈরী রাখা।
৩. অন্য পারদর্শী মানুষের সাথে কাজ করা।
সাধারন মানুষ সবসময় বলেন সুযোগ নেই কিন্তু লেখক বলেন সুযোগ সবসময় সব ক্ষেত্রেই আছে সাধারন মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক শিক্ষা না থাকের জন্য তাঁরা সেই সুযোগ গুলোকে দেখতে পান না।
Lesson 6: Work to Learn-don’t Work for Money ( শেখার জন্য কাজ করুন টাকার জন্য নয়)।
লেখক তাঁর বইয়ের ৬ নম্বর অধ্যায়ে বলেছেন কম বয়সী দের কাজ টাকার জন্য না করে শেখার জন্য করা উচিৎ। তাঁদের নির্দিষ্ট কোন পেশা বেছে নেওয়ার আগে ভালোকরে পড়াশোনা করে নেওয়া উচিৎ তাঁর পেশায় কি ধরনের শিক্ষার প্রয়োজন আছে। লেখক নিজে একদম তাই করেছিলেন, তিনি কলেজ শেষ করে মেরিন-এ সংযুক্ত হন এবং দেশের সেবা করার সাথে সাথে জনসংযোগ, নেতৃত্ব দেওয়ার দরকারি শিক্ষা নিতে থাকেন। তিনি তাঁর ভয় কে কাটাতে বিখ্যাত কম্পনি “জেরক্স” জয়েন করেন সেখানে শ্রেষ্ঠ পাঁচ জন বিক্রেতার একজন হয়ে ওঠেন।
Rich Dad Poor Dad এর ৬ নম্বর অধ্যায়ে লেখক তিনটি গুরুত্পূর্ণ শিক্ষার কথা বলেছেনঃ
১. নিজের অর্থাগম কে সুপথে চালিত করা।
২. ব্যাবস্থাপনাকে চালিত করা।
৩. মানুষকে সু নিয়ন্ত্রিত করা।
Chapter 7: Overcoming Obstacles. ( অভিভুতকারি প্রতিবন্ধকতা)।
লেখক রবার্ট টি. কিওশাকি তাঁর বই Rich Dad Poor Dad – এ পাঁচটি প্রতিবন্ধকতার কথা বলেছেন যা মানুষ কে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
১. ভয়
এখানে লেখক বলছেন ভয় অর্থাৎ টাকা ক্ষতি হওয়ার ভয়। কিন্তু তিনি এমন কোন ধনী মানুষ কে দেখেন নি যার টাকার লোকসান হয়নি। কিন্তু প্রচুর গরীব মানুষ কে দেখেছেন যার কোন টাকার লোকসান কখন হয়নি। কারন তিনি কোন দিন বিনিয়োগ-ই করেন নি। তাই আপনাকে যদি অর্থবান হতে হয় তাহলে ভয় কে জয় করতে হবে সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে।
২. Cynicism (শুভনাস্তিক)
লেখকের মতে প্রত্যেক মানুষের মধ্যে নিজের জন্য একটু সন্দেহ থাকে যে তিনি ঠিক ঠাক পারবেন কি না? আর যদি না পারেন তাহলে কি হবে। বিশেষ করে যখন তাঁর পরিবারের থেকে তিনি বাধাপ্রাপ্ত হন তখন তিনি আর এগোতে পারেন না।
৩. অলসতা।
এখন সকল মানুষ প্রচুর ব্যাস্ত। তাঁরা সকাল বেলা অফিস যায় রাত্রে ফেরে অফিসের কাজ বাড়িতে নিয়ে সপ্তান্তে ও বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করে। কিন্তু Rich Dad Poor Dad বই অনু্যায়ী সবথেকে ব্যাস্ত লোকগুলোই সব থেকে বেসি অলস। কারন এই তাঢ়াহুড়োতে তাঁরা হারিয়ে ফেলে আসল লক্ষ গুলয়কে।
বেশির ভাগ ধনী ব্যক্তিই Proactive তাঁরা সবসময় নিজেদের প্রতি এবং নিজের সম্পদ তৈরীতে লক্ষ দেন।
৪. খারাপ অভ্যেস।
খারাপ অভ্যেস মানুষের আচরণ কে নিয়ন্ত্রন করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় মানুষ প্রথমে তাঁদের বিলের টাকা খরচ করে পরে নিজের জন্য। তাতে মাসের শেষে বিনিয়োগের জন্য বাঁচে যৎসামান্য। তাই সঠিক ভাবে বিনিয়োগটাও করা হয়ে ওঠে না।
৫. দাম্ভিকতাঃ
বিনিয়োগ কারিরা জানেন না কিসে তাঁদের লোকসান হবে।মানুষ যখন দাম্ভিক হয়ে পড়ে তখন মনে করে তাঁরা যেটা জানেন না সেটা কোন জানার বিষয় নয়। লেখক বলছেন যেখানে বিনিয়োগ এবং অর্থের আলোচনা হচ্ছে সেখানে শোনা উচিৎ অন্যরা কি বলছেন। যদি আপনি আপনার দাম্ভিকতার জায়গাটা ধরে ফেলেন তাহলে তাঁর উপর কাজকরা এবং সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত দরকার।
Chapter 8: Getting Started. (শুরু করা যাক)।
Rich Dad Poor Dad এর আট নম্বর অধ্যায়ে লেখক বলছেন সুযোগ সব জায়গায় আছে কিন্তু সবাই সেটা দেখতে পায়না কারন সবাই এটা দেখার জন্য প্রশিক্ষিত নয়। এর একটা বড়ো কারন হলও আমরা খুব কম বয়স থেকে অন্যের জন্য পরিশ্রম করতে শিখি। তারপর ইঁদুর দৌড়ের মধ্যে আমরা আর নিজেকে গড়ে তুলতে পারিনা অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য।
লেখক দশটি স্টেপ দেখিয়েছেন যার মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে অর্থনৈতিক দক্ষ করে তুলতে পারি।
১. আমরা যেটা করছি তার জন্য আবেগ এবং উদ্দ্যেশ্য থাকা দরকার সঙ্গে আমরা যেটা চাইছি আর চাইছিনা সেটাও
২. আমাদের পছন্দে গুলকে ঠিক করে বুঝতে হবে তারসাথে আমাদের দৈনিক কার্যকলাপ। এবং প্রত্যেক দিন শেখার সাথে সাথে নিজেদের অভ্যেস উপর কাজ করতে হবে।
৩. বন্ধু তৈরি করার ক্ষত্রে যত্নবান হতে হবে।
৪. তাড়াতাড়ি শেখার চেষ্টা করতে হবে অর্থ উপার্জনের ফর্মুলা তৈরি করতে হবে।
৫. নিয়মানুবর্তিতা, ব্যাক্তগত সময়, ক্যাশফ্লো শেখার সাথে সাথে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।
৬. নিজের টিমের জন্য শ্রেষ্ঠ মানুষ খুজতে হবে তাঁদের উপদেশের জন্য তাঁদের কে আর্থিক সুবিধা দিন কারন তাঁদের আর্থিক সুবিধা দিলে তাঁরা আপনার অর্থ উপার্জনের দিকে দৃষ্টিবান হবেন।
৭. চিন্তা করুন আপনার বিনিয়োগ থেকে কতো তাড়াতাড়ি টাকা ফিরত আসতে পারে।
৮. এমন সম্পত্তি তৈরী করুন যা আপনাকে অর্থ উপার্জন করে দেয়।
৯. একজন কে বাছুন যার মতো আপনি হতে চান এবং তার চলা পথে আপনিও চলুন।
১০. এটা উপলদ্ধি করতে হবে যদি আপনি কিছু পেতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকেই কিছু দিতে হবে।
Chapter 9: Still want more? Here are some to-do’s. (আরো কিছু চান? এখানে করার আছে)
শেষ অধ্যায়ে লেখক রবার্ট টি কিওশাকি তার Rich Dad Poor Dad বই তে কিছু লিস্ট দিয়েছেন যেগুলো আজ থেকে শুরু করা যায়।
- যে কাজ গুলো করছেন সেগুলি বন্ধ করে একটু দেখে নিন এটা আপনার জন্য সঠিক কি না।
- নতুন এবং অন্যরকম জিনিসের (idea) উপর কাজ করুন।
- একজন পথ প্রদর্শক কে খুঁজে বার করুন, তাঁদের কে খাওয়ান এবং তাঁদের বুদ্ধিকে কাজে লাগান।
- সবসময় পড়াশোনা এবং আলোচনা সভা অংশ গ্রহণের মাধ্যমে শিখতে থাকুন।
- যে যায়গায় হাঁটেন, দৌড়ন, ১০ মিনিট সময় নিয়ে দেখুন কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা এবং সেখানে আপনার জন্য কোন সু্যোগ তৈরি হচ্ছে কি না।
- যখন বাজার আপনার অনুকুলে তখন কিনুন কারন আপনার লাভক্ষতির হিসাব কেনার সময় হয়ে যায় বিক্রির সময় নয়।
- আপনার শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে, কখন, কেন, কিভাবে কিনতে হয় শিখুন।
- ধনী হওয়ার জন্য বড়ো ভাবুন। কারন ছোট চিন্তা করলে বড়ো কিছু হবেনা।
- প্রথমে বড়ো কিনুন এবং সেটাকে টুকরো করে বিক্রি করুন কারন বেশির ভাগ মানুষ ছোট টুকরো কিনতে বেশি দাম দেয়।
- ইতিহাস থেকে শিখুন কারন ইতিহাস পুনরাবৃত্তি হয়।
- কর্ম সব সময় অকর্ম কে অতিক্রম করে যায়।
এই বই কি আপনার পড়া উচিৎ?
এই বইয়ের সারাংশের শুরুতেই বই আমদের সবথেকে ভালো বন্ধু আর আমাদের জীবনে যত বেশি ভালো বন্ধু থাকবে তা আমাদের জন্য ভালো। এই বই আমাদের জীবনের ব্যক্তিগত অরথনিতীকে নতুন মাত্রা যোগ করবে। ধনী হতে গেলে কি ধরনের মানসিকতার প্রয়োজন সেটা জানার সাথে সাথে কি ভাবে সঠিক দিকে নিজেকে চালিত করার রাস্তা খুজে পাবেন। আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নতুন ভাবে চিন্তা করতে শিখবেন।
তথ্য নেওয়া হয়েছেঃ-
Rich Dad Poor Dad বই থেকে
অন্যান্য বই এর সংক্ষেপ।